নষ্ট পথে আমাকে ডাকে

বিজলীত মনের ফেনীল আকাঙ্ক্ষা
হায়েনার মতো রক্তে আক্রোশ
মিশে আছে জেনা -
সমাজের প্রতিটি সেলাইয়ের ছেঁদ বিন্দুতে।

আমি দেখি রক্তের দাগ
আমার নাকে- মুখে সবখানে
বীভৎস ভয় আর আমার একাকি আর্তনাদ
সমাজের প্রতিটি সেলাইয়ের ছেঁদ বিন্দু থেকে-
আমাকে ডাকে।

আমি বৃষ্টি হতে চাই

তুমি প্রিয়শী আজ অনেক খুশি
বৃষ্টি ছুঁয়েছ মেঘ ভেদি
নেচে নেচে তুমি বিষম খুশি
বৃষ্টি যে ছুঁয়েছ মন অবধি।

বৃষ্টিও আজ অনেক খুশি
ছুঁয়েছে যে তুমার অনুভুতি।
তোমার অঙ্গে অঙ্গে সে করছে বিচরণ
আজ মনে জাগে তাই
আমি বৃষ্টি হতে চাই
আমি বৃষ্টি হতে চাই।

আমার আমি

অন্ধকারের নির্জনতা ভেঙ্গে এসেছিলাম –
তোমাদের আলোময় জগতে।

আমি ছিলাম সুন্দর্যের পূজারী
সব পূজাকে সর্বশান্ত করে চলে এলাম-
তাতে কি পেলাম আমি?
হাজারো অবজ্ঞা আর গ্লানী ছাড়া।
তাই আজ সবার খুব কাছে থাকা সত্তেও
আমি খুব দূরে।
একাকীত্ব- কে সঙ্গী করে জেগে আছি
রাত জাগা পেচাঁর মত।

আমি যা আমি তা

জান কি গো জান তুমি
হৃদয়ের গহিন
তোমার তুমিতে আসিন হওয়া
আমি সমাহিন।

তৃষ্ণা তখন মনের জমি
উতাল হাওয়ায়
অসম দেহের উত্তাল নদী
তোমার তুমিতে আসিন হওয়া
আমার আমিতে তুমি।
আমি যা আমি তা
হৃদয়ের গহিনে
মাতাল হাওয়ায়
জান কি গো জান তুমি
হৃদয়ের গহিন
তোমার তুমিতে আসিন হওয়া
আমি সমাহিন।

শ্বপ্ন-প্রিয়াশ্বরী (কাব্য গল্প)

এমন একটা দিন আসবে,
আমি আশাও করব সেই দিনের-
একই ট্রেনে
পাশা পাশি সীট হবে দু’জনার সীট।
অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দু’জনে
আরও আবাক হব আমি
তুমি প্রিয়াশ্বরীকে দেখে।
তাও আমার পাশে-
খুব কাছে, ভীষণ কাছে।
ছল ছল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে
তুমি বলবে-
তোমার হাতটা একটু ধরি?
আমি ভীষণ রকম আশ্চর্য হয়ে
মাথা নেড়ে সম্মতি জানাব।
আর-
ভাবতে থাকব
যার হাত ধরার জন্য, যার একটু উষ্ণতা পাবার জন্য
প্রিয়াশ্বরী প্রিয়াশ্বরী বলে মুখে ফেনা তুলেছি
কত রাত জেগে কাটিয়েছি-
করেছি কত কি!
কিন্তু-
আমার সেই প্রিয়াশ্বরী
তার কাছে টানেনি আমায়।
নিজেকে লুকিয়ে নিয়েছে
আমাকে অনুভুতিহীন রেখেই।
এর পর থেকে-
ভীষণ কষ্ট নিয়ে শুধুই-
স্মৃতির যাবর কেটেছি।
অভিযোগহীন একাকী জীবনটাকে নিয়ে সামনে এগিয়েছি
একটা কচ্চপের মত।
হঠাত একদিন – এই ভাবে-
দেখা হবে ট্রেনে; ভাবতেই পারছিনা।
কী ভীষণ উষ্ণ ভাল লাগা।
দু’জনার মাঝে, আর কোন কথা নেই
শুধুই নিরব বসে থাকা,
হাতে হাত রেখে।
একটা সময় বুঝতে পারলাম
আমরা আমাদের গন্তব্যে চলে এসেছি
এই হাত আর ধরে রাখা যাবে না।
প্লাটফর্মে এসেও কোন কথা নেই
শুধুই নিরবতা।
একে অন্যের দিকে তাকিয়েই বিদায় জানালাম।
দু’জন দু’জনার থেকে দূরে সরে যেতে যেতে
আচমকা খেয়াল করলাম-
আমার প্রিয়াশ্বরীর চোখের কোনায়-
অশ্রু দানা।
আবেগে ওষ্ঠধর তার কাঁপছে।
সম্ভবত-
আমাকে নতুন করে এত কাছে পাওয়ার পরও
আবার হারানোর বেদনা তার।
এটা ভাবতেই- নিজের ভালবাসাকে
অনেক ধন্য মনে হল।
বুঝতে পারি-
প্রিয়াশ্বরীর মনের অনেকটা জায়গা জুরেই
আমার আমি ছিলাম।
(মেঘনার পাড়, আশুগঞ্জ)

আমার কেন এই পৃথিবীতে আসা?

আয়নিত মনকে,
বলেছিলাম-
দেহের জৈবতা থেকে দূরে থাকতে।
কিন্তু-
দূর্গন্ধময় নষ্ট সমাজ
আয়নিত মনকে
চৌম্বকের বলয়ে
আবিষ্ট করে রাখে।
যেন-
দেহের জৈবতেকে সতেজ ভাবে ধরে রাখতে পারে।
তখন-
নষ্ট সমাজ আরো নষ্ট হয়,
দূর্নীতিবাজ নেতার বলিষ্ট ছায়ায়।
তবে কি আমি প্রতিভা;
নারীর যৌবনের লেলিহান সিখায়-
ভস্মীভূত হয়ে যাব-
একটা দামী সিগারেটের মত!
তবে প্রশ্ন থাক এই নষ্ট সমাজের কাছে-
আমার কেন এই পৃথিবীতে আসা ?